শব-ই-কদর অপরিসীম বরকতময় একটি রাত এবং এটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম বলে বিবেচিত। এটি সেই রাতে যখন কুরআন সর্বপ্রথম নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি অবতীর্ণ হয়।
শব-ই-কদরের রাতে, বেহেশতের দরজা খোলা থাকে এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ থাকে। এটি শান্তি ও আশীর্বাদের একটি রাত এবং এমন একটি রাত যেখানে প্রার্থনার উত্তর পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই বিশেষ রাতের বরকত দান করুন। আমীন।
নিচে শব-ই-কদরের রাতে সফল হওয়ার কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো:
১. মোনাজাত: মোনাজাতের মাধ্যমে বান্দা তার প্রভুর কাছে চায়; এতে আল্লাহ অনেক খুশি হন। অন্তর থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ অবশ্যই তার বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। মোনাজাত কবুল হওয়ার ক্ষেত্রে পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা বান্দাদের দুয়া আল্লাহ অবশই কবুল করেন। এজন্যে নিজ চোখের হেফাজত করা বাঞ্চনীয়। দুয়া হচ্ছে ইবাদতের মূল। যার জন্যে দুয়ার দরজা খোলা তার জন্যে রহমত এর দরজা খোলা। আল্লাহু আকবার। কাজেই আমরা আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইবো, রহমত চাইবো, জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্যে দোয়া করবো।
লাইলাতুল-কদর প্রাপ্তির জন্যে নিষ্ঠার সাথে দুআ করলে আল্লাহ আমাদের বঞ্চিত করবেন না; ইনশাল্লাহ।
২. অতিরিক্ত না ঘুমানো: শব-ই-কদরের আসায় আমাদের মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ) কোমরে কাপড় বেধে লেগে যেতেন। তিনি রমজানের শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাতে শব-ই-কদরের তালাশ করতেন।
রমজানের এই ৫ দিন অর্থাৎ শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাত্রি আমরা বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী ও মোনাজাত ও মহান আল্লাহর জিকির করে কাটাতে পারি। আমরা বিশেষ করে ২৭ই রমজান রাতে না ঘুমিয়ে আল্লাহর ইবাদত করে কাটাতে পারি।
৩. অতিরিক্ত খাবেন না: শব-ই-কদরের রাতে যেন ঘুমিয়ে না পড়েন এজন্যে আপনি ইফতার এবং রাতের খাবারে বেশি বেশি খাবেন না। পরিমান মতো পুষ্টিকর খাবার খাবেন যেন আপনার স্টামিনা ভালো থাকে। এ রাতে এত বেশি খাবেন না যে, পেটের ভরে নুইয়ে পড়েন। মনে রাখবেন শব-ই-কদরের রাত কিন্তু বছরে ১টিই।
৪. এ রাতে আপনি আত্মসমালোচনা করতে পারেন: আত্মসমালোচনা আমাদের বিবেক কে জাগিয়ে তুলে। এ রাতে আপনি চিন্তা করবেন, আল্লাহর কি কি আদেশ আপনি অমান্য করেছেন। কত রাকাত নামাজ আপনি আদায় করেন নি। অপর ভাই এর সাথে আপনি কেমন আচরণ করেছেন। আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার জন্যে আপনি কি করেছেন। আত্ত্বসমালোচনার মাধ্যমে আপনি আপনার ভুল গুলোকে বুঝতে পারবেন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।
৫. জিকির এবং দুয়া করবো: যেসব জিকির এবং দুয়ার বেশি ফজিলত আছে। সেসব নির্বাচন করে এ রাতে আপনি যিকর করতে পারেন।
৬. তাহাজ্জুত নামাজ পড়তে পারেন: আপনি ২ রাকাত থেকে শুরু করে যত খুশি তত রাকাত নামাজ পড়তে পারেন। এ নামাজ আপনি নফল নামাজ স্টাইলে পড়তে পারেন। লম্বা কিরাত করে পড়তে পারেন। সূরা-ফাতিহার সাথে নির্দিষ্ট কোনো সূরা পড়তে হবে; হাদিসে তার উল্লেখ পাওয়া যায় না। একাগ্রতার সাথে নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন। ইনশাল্লাহ আপনার নামাজ আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যাবে।
৭. কুরআন তিলাওয়াত করবেন: অব্যশই এ রাতে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করবেন। কুরআন হলো আল্লাহর কিতাব। পবিত্র শব-ই-কদরের রাতে আল্লাহ তায়ালা কোরআন অবতীর্ণ করেন। অবশ্যই এই মহিমান্বিত রাতে কোরআন পড়ার অনেক ফজিলত আছে।
শব-ই-কদর একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত কারণ এটি সেই রাতে যখন কুরআন নবী মুহাম্মদের কাছে প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে এই রাতে বেহেশতের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শিকলে বদ্ধ করা হয়। এটি প্রার্থনা এবং উপাসনার একটি রাত, এবং এটি বিশ্বাস করা হয় যে এই রাতে একজন ব্যক্তি যা কিছু ভালো করে তা বহুগুণ বেশি হবে।
0 মন্তব্যসমূহ